বালুর বলি কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়ক, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বানার নদী থেকে!!
বালুর বলি কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়ক,
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বানার নদী থেকে!!
শীতলক্ষার বর্ধিতাংশ বানার নদীর কোলঘেষে কাপাসিয়া ও শ্রীপুর উপজেলার বিশাল এলাকা জুড়ে কয়েক বছর ধরে চলছে বালু সন্ত্রাস। আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কখনো বৈধ আবার কখনো অবৈধ উপায়ে উত্তোলন করা হচ্ছে শত শত কোটি টাকার বালু। নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে এ বালু পরিবহনে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা ঘাট। সরকারি খাতায় জমা হয়নি কোনো রাজস্ব। স্থানিয় প্রশাসনের উদাসীনতায় বালু সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া।
এলাকাবাসির অভিযোগ, কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়ক চলাচলের অনুপযোগী। সড়কের এই বেহাল দশা হয়েছে অতিরিক্ত বালু বোঝাই করা ট্রাক চলাচলের কারণে। সড়কের লোড ধারণের চেয়ে অনেক বেশী ওজনের বালু ভর্তি ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহনের ফলে বড় বড় গর্ত হয়ে জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে রাস্তাটি। বালু সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায়নি। মিথ্যা তথ্যদিয়ে ড্রেজিং এর নামে উচ্চ আদালত থেকে সময় বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে ইজারার। এই সুযোগে দীর্ঘদিন যাবৎ হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমান টাকা। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়নপুরের একজন গাজীপুর দর্পণকে জানান, কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়কের কাপাসিয়া ফকির মজনু শাহ্ ব্রীজ হতে নায়ারনপুর বাজার পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল চিত্র। এ রাস্তা এখন জনদুর্ভোগের কারণ। কাপাসিয়া থেকে নারায়নপুর বাজার পর্যন্ত ৩০টির বেশী বালুর গদি রয়েছে। প্রত্যেকটি গদিতে বছরে ২/৩ বারে অত্যন্ত ৫০ কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হয়। এসব বালু জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। বিপুল পরিমান বালুর বিক্রয় মূল্য শত কোটি টাকার উপরে।
নারায়নপুর থেকে গোসিঙ্গা পর্যন্ত রয়েছে কয়েকটি বালুর গদি। নারায়নপুরের মৃত গিয়াস বেপারীর জমিতে গড়ে উঠেছে বিশাল বালুর স্তুপ। বালুর গদির কর্মচারীদের বরাদ দিয়ে এলাকার মানুষ বলাবলি করছে ৩০ ফুট উচু এই গদিতে ৪০ লাখ ঘনফুট বালু রয়েছে। প্রতি ঘনফুট ৫টাকা হিসাবে এখানে প্রায় ২ কোটি টাকার বালু রয়েছে। জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা থেকে নির্দিষ্ট মৌজার দাগ-খতিয়ান উল্লেখ করে ইজারা দেয়া হলেও বালু সন্ত্রাসীরা ড্রেজার দিয়ে বানার নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে এসকল বালু কেটে আনছে। গত কয়েক দিন কাপাসিয়ার সাফাইশ্রী গুদারাঘাট সংলগ্ন এলাকায় হান্নান শাহ্’র ইটা খোলার নিচ থেকে আবেদা ড্রেজিং সহ ৪টি ড্রেজার দিয়ে বালু কাটতে দেখা গেছে। এরকম ভাবে বানার নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায়ই বালু কাটতে দেখা যায়। কাপাসিয়া থেকে বরর্মীর উজান পর্যন্ত ইজারার বাইরে বিভিন্ন স্থান থেকে বালু কাটছে বালু সন্ত্রাসীরা। যেভাবে পুরো বানার নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে-এতে করে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। নদীর পুরো অংশ জুরে যেভাবে বালু উত্তোলন করা হয় সেইভাবে ইজারা দিলে সরকারের রাজস্ব আরো কয়েক কোটি টাকা বাড়তো। এসব জেলা প্রশাসনের পক্ষে স্থানিয় ভাবে তদারকি করার কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নোমান নামে এক বালু ব্যবসায়ী ড্রেজার ভাড়া করে এসব বালু কাটছে। তাঁর মতো আরো কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী এভাবেই অবৈধভাবে প্রায়ই নদী থেকে বালু কেটে সরকারের ক্ষতি করছে। আর ট্রাক যোগে এসব বালু পরিবহন করেই রাস্তা-ঘাট নষ্ট করা হচ্ছে। কাপাসিয়া-নারায়নপুর সড়কে বালু পরিবহনের কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে কাঁদা আর রোধে বালু বাতাসে উড়ার কারণে এ সড়ক দিয়ে হাঁটা যায় না। মেরামত করেও রাস্তা ঠিক রাখা যায়না বলে বছরের বেশীর ভাগ সময়ই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী থাকে। আর রাস্তাটি ঠিক করতে গেলে প্রয়োজন হয় অনেক টাকা। ফান্ডের অভাবে রাস্তাটি সংস্কার করা যাচ্ছেনা বলে জানান রাস্তার দায়িত্বে থাকা গাজীপুর সড়ক বিভাগ। গাজীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ডি এ কে এম নাহীন রেজা গাজীপুর দর্পণকে জানান, কিছুদিন আগে স্থানিয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি ও কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে বালুর গদির মালিকরা রাস্ত থেকে গদি সরিয়ে নেবেন এবং রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেন নিমার্ণ করে নিবেন। তিনি আরো জানান, এই রাস্তাটি সম্প্রতি স্থানিয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করেছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা হলেই আমরা রাস্তাটি করে দিব।
কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ জানান, রাস্তার দুই পাশের নিচু জমিতে বালুর গদি করায় পানি রাস্তায় জমে গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার পাশদিয়ে ড্রেন নির্মাণ করে পানি সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে এবং চলাচলের উপযোগী করতে আরসিসি ঢালাই দিতে হবে।
অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বিষয়ে কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এবি সিদ্দিক গাজীপুর দর্পণকে জানান, শুনেছি আদালত থেকে বালু তোলার অনুমতি নিয়েছে। এবিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলার প্রারামর্শ দেন তিনি।
গাজীপুর দর্পণ পত্রিকার পক্ষ থেকে বালু উত্তোলন ও নারায়নপুর সড়কের উন্নয়ন বিষয়ে জানতে একাধিকবার কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আনিছুর রহমান এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
নিউজ
মঞ্জুর হোসেন মিলন - gazipurdarpon
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বানার নদী থেকে!!
শীতলক্ষার বর্ধিতাংশ বানার নদীর কোলঘেষে কাপাসিয়া ও শ্রীপুর উপজেলার বিশাল এলাকা জুড়ে কয়েক বছর ধরে চলছে বালু সন্ত্রাস। আদালতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কখনো বৈধ আবার কখনো অবৈধ উপায়ে উত্তোলন করা হচ্ছে শত শত কোটি টাকার বালু। নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে এ বালু পরিবহনে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা ঘাট। সরকারি খাতায় জমা হয়নি কোনো রাজস্ব। স্থানিয় প্রশাসনের উদাসীনতায় বালু সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া।
এলাকাবাসির অভিযোগ, কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়ক চলাচলের অনুপযোগী। সড়কের এই বেহাল দশা হয়েছে অতিরিক্ত বালু বোঝাই করা ট্রাক চলাচলের কারণে। সড়কের লোড ধারণের চেয়ে অনেক বেশী ওজনের বালু ভর্তি ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহনের ফলে বড় বড় গর্ত হয়ে জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে রাস্তাটি। বালু সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চায়নি। মিথ্যা তথ্যদিয়ে ড্রেজিং এর নামে উচ্চ আদালত থেকে সময় বাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে ইজারার। এই সুযোগে দীর্ঘদিন যাবৎ হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল পরিমান টাকা। সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়নপুরের একজন গাজীপুর দর্পণকে জানান, কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়কের কাপাসিয়া ফকির মজনু শাহ্ ব্রীজ হতে নায়ারনপুর বাজার পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল চিত্র। এ রাস্তা এখন জনদুর্ভোগের কারণ। কাপাসিয়া থেকে নারায়নপুর বাজার পর্যন্ত ৩০টির বেশী বালুর গদি রয়েছে। প্রত্যেকটি গদিতে বছরে ২/৩ বারে অত্যন্ত ৫০ কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হয়। এসব বালু জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। বিপুল পরিমান বালুর বিক্রয় মূল্য শত কোটি টাকার উপরে।
নারায়নপুর থেকে গোসিঙ্গা পর্যন্ত রয়েছে কয়েকটি বালুর গদি। নারায়নপুরের মৃত গিয়াস বেপারীর জমিতে গড়ে উঠেছে বিশাল বালুর স্তুপ। বালুর গদির কর্মচারীদের বরাদ দিয়ে এলাকার মানুষ বলাবলি করছে ৩০ ফুট উচু এই গদিতে ৪০ লাখ ঘনফুট বালু রয়েছে। প্রতি ঘনফুট ৫টাকা হিসাবে এখানে প্রায় ২ কোটি টাকার বালু রয়েছে। জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা থেকে নির্দিষ্ট মৌজার দাগ-খতিয়ান উল্লেখ করে ইজারা দেয়া হলেও বালু সন্ত্রাসীরা ড্রেজার দিয়ে বানার নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে এসকল বালু কেটে আনছে। গত কয়েক দিন কাপাসিয়ার সাফাইশ্রী গুদারাঘাট সংলগ্ন এলাকায় হান্নান শাহ্’র ইটা খোলার নিচ থেকে আবেদা ড্রেজিং সহ ৪টি ড্রেজার দিয়ে বালু কাটতে দেখা গেছে। এরকম ভাবে বানার নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায়ই বালু কাটতে দেখা যায়। কাপাসিয়া থেকে বরর্মীর উজান পর্যন্ত ইজারার বাইরে বিভিন্ন স্থান থেকে বালু কাটছে বালু সন্ত্রাসীরা। যেভাবে পুরো বানার নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে-এতে করে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে। নদীর পুরো অংশ জুরে যেভাবে বালু উত্তোলন করা হয় সেইভাবে ইজারা দিলে সরকারের রাজস্ব আরো কয়েক কোটি টাকা বাড়তো। এসব জেলা প্রশাসনের পক্ষে স্থানিয় ভাবে তদারকি করার কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নোমান নামে এক বালু ব্যবসায়ী ড্রেজার ভাড়া করে এসব বালু কাটছে। তাঁর মতো আরো কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী এভাবেই অবৈধভাবে প্রায়ই নদী থেকে বালু কেটে সরকারের ক্ষতি করছে। আর ট্রাক যোগে এসব বালু পরিবহন করেই রাস্তা-ঘাট নষ্ট করা হচ্ছে। কাপাসিয়া-নারায়নপুর সড়কে বালু পরিবহনের কারণে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে কাঁদা আর রোধে বালু বাতাসে উড়ার কারণে এ সড়ক দিয়ে হাঁটা যায় না। মেরামত করেও রাস্তা ঠিক রাখা যায়না বলে বছরের বেশীর ভাগ সময়ই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী থাকে। আর রাস্তাটি ঠিক করতে গেলে প্রয়োজন হয় অনেক টাকা। ফান্ডের অভাবে রাস্তাটি সংস্কার করা যাচ্ছেনা বলে জানান রাস্তার দায়িত্বে থাকা গাজীপুর সড়ক বিভাগ। গাজীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ডি এ কে এম নাহীন রেজা গাজীপুর দর্পণকে জানান, কিছুদিন আগে স্থানিয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি ও কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে বালুর গদির মালিকরা রাস্ত থেকে গদি সরিয়ে নেবেন এবং রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেন নিমার্ণ করে নিবেন। তিনি আরো জানান, এই রাস্তাটি সম্প্রতি স্থানিয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করেছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা হলেই আমরা রাস্তাটি করে দিব।
কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ জানান, রাস্তার দুই পাশের নিচু জমিতে বালুর গদি করায় পানি রাস্তায় জমে গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তার পাশদিয়ে ড্রেন নির্মাণ করে পানি সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে এবং চলাচলের উপযোগী করতে আরসিসি ঢালাই দিতে হবে।
অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বিষয়ে কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এবি সিদ্দিক গাজীপুর দর্পণকে জানান, শুনেছি আদালত থেকে বালু তোলার অনুমতি নিয়েছে। এবিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলার প্রারামর্শ দেন তিনি।
গাজীপুর দর্পণ পত্রিকার পক্ষ থেকে বালু উত্তোলন ও নারায়নপুর সড়কের উন্নয়ন বিষয়ে জানতে একাধিকবার কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আনিছুর রহমান এর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
নিউজ
মঞ্জুর হোসেন মিলন - gazipurdarpon
No comments