একনজরে আ স ম হান্নান শাহর বর্ণাঢ্য জীবন!

একনজরে আ স ম হান্নান শাহর বর্ণাঢ্য জীবন!

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আবু সাইদ মতিউল (আ স ম )  হান্নান শাহ গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার ঘাগটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ফকির আবদুল মান্নান ১৯৬৫-৬৮ পর্যন্ত পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
তার ছোট ভাই শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ছিলেন।


বর্ণাঢ্য সামরিক জীবনের অধিকারী আ স ম হান্নান শাহ ১৯৬২
সালে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি থেকে কমিশন লাভ করেন। এরপর তিনি পাকিস্তানের বিভিন্ন সেনানিবাসের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিগ্রেড কমান্ডার, চট্টগ্রামের মিলিটারি একাডেমির কমান্ডেন্ট, যশোর স্কুল অব ইনফ্রেন্টি অ্যান্ড টেকটিক্স এর প্রধান প্রশিক্ষক, পাকিস্তানের কোয়েটার আর্মি কলেজ অব ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিংক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রশিক্ষকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে পালন করেন হান্নান শাহ।

১৯৮১ সালে ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল সেনা সদস্যর হাতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে রাঙ্গুনিয়া থেকে প্রেসিডেন্টের মরদেহ ঢাকায় নিয়ে আসেন হান্নান শাহ।
এইচ এম এরশাদ সরকার হান্নান শাহকে সেনাবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়। তিনি সরকারের সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (এপিডি) ও বিএডিসির চেয়ারম্যানও ছিলেন।

তিনি ১৯৮৩ সালে বিএডিসির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে বিএনপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন।  রাজনৈতিক জীবনে শুরুতে ১৯৮৩ সালে হান্নান শাহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক, ১৯৮৬-১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) এবং ১৯৯৩-২০০৯ সাল পর্যন্ত দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন।
১/১১ এর কঠিন সময়ে খালেদা জিয়া ও জিয়া পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আ স ম হান্নান শাহ বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের সংগঠিত করার কাজে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও দলের সংস্কারপন্থী অংশের কর্মকাণ্ড ও ষড়যন্ত্র এর বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের সামনে এসে সাহসী কণ্ঠে কথা বলে দেশ-বিদেশে দলের নেতাকর্মীদের দৃষ্টি কাড়েন তিনি। ২০০৯ সালে বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে আ স ম হান্নান শাহ
দলীয় সবোর্চ্চ ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ষষ্ঠ কাউন্সিলেও তিনি এই পদে পুনর্নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে গাজীপুর ৪ আসন (কাপাসিয়া) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন হান্নান শাহ। খালেদা জিয়ার সরকারের পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী ছিলেন তিনি। স্বৈরাচার এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনে আ স ম হান্নান শাহ কয়েকবার কারাগারে যান।
একইভাবে বর্তমান সরকারের আমলেও তাকে কয়েকবার কারাগারে যেতে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৩০টির বেশি মামলা রয়েছে। হান্নান শাহ ব্যক্তিগত জীবনে দুই ছেলে ও এক কন্যাসন্তানের জনক ছিলেন। তিনি কাপাসিয়ায় অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,স্কুল কলেজ,রাস্তা-ঘাট নির্মান সহ অগনিত কাজের স্বাক্ষর রেখেছেন। ফকির মজনু শাহ সেতু তাঁর একটি বড় প্রমান। তিনি গাজীপুর তথা কাপাসিয়ার উন্নয়নের রূপকার ছিলেন।

আ স ম হান্নান শাহ গত মঙ্গলবার (২৭/০৯/২০১৬) ভোরে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তথ্যসূত্রঃ কালেরকন্ঠ

No comments

Theme images by Storman. Powered by Blogger.